রাজধানী ঢাকা থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার পূর্ব দিকে কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলায় বাখরাবাদ গ্যাসক্ষেত্র অবস্থিত। তিতাস ও হবিগঞ্জের মতো ১৯৬৯ সালে পাকিস্তান শেল অয়েল কোম্পানি লিমিটেড বাখরাবাদ গ্যাস ক্ষেত্রটি আবিষ্কার করে। ভূমিকম্প দ্বারা নির্ধারিত বাখরাবাদ আতঙ্কের একটি সংকীর্ণ প্রবাহ প্রায় ৬৯ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ১০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। পেট্রোবাংলার হিসাব অনুযায়ী, বাখরাবাদ ফিল্ডের মোট উত্তোলনযোগ্য গ্যাসের মজুদ ১,৩৮৭ বিলিয়ন ঘনফুট (বিসিএফ)। ১৯৮৪ সালে এ গ্যাস ক্ষেত্র থেকে বাণিজ্যিক গ্যাস উৎপাদন শুরু করা হয় এবং মার্চ ৩১, ২০২৪ পর্যন্ত মোট ৮৮২.৩১৭ বিলিয়ন ঘনফুট বা উত্তোলনযোগ্য মোট মজুদের শতকরা ৬৩.৬১% গ্যাস উত্তোলন করা হয়েছে।
ফিল্ডের তিনটি লোকেশনে মোট ১০ (দশ)টি কূপ খনন করা হয়েছে। এই কূপগুলির মধ্যে ০২ (দুই)টি কূপ (কূপ নং # ১ ও ৯) উল্লম্ব এবং বাকি ৮ (আট)টি কূপ ডেভিয়েটেড। ১৯৯২ সালের জুন মাসে এই ক্ষেত্র থেকে সর্বাধিক ২১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদিত হয়। ২০২৪ সালের মার্চ মাসে এই ক্ষেত্রের ০৬ টি উৎপাদনরত কূপ থেকে গড়ে প্রতিদিন ৩০.৮৩ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদিত হয় এবং প্রডাকশন টিউবিং এ অতিরিক্ত পানি উৎপাদনের জন্য অন্যান্য ০৪ টি কূপ (কূপ নং # ২, ৪, ৬ এবং ৭) থেকে গ্যাস উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। ফিল্ডের উৎপাদিত গ্যাস ০৪ টি সলিড ডেসিকেন্ট সিলিকাজেল টাইপ গ্যাস প্রসেস প্লান্টের মাধ্যমে প্রক্রিয়াকরণ করে গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেড (জিটিসিএল) এর বাখরাবাদ-চট্রগ্রাম ট্রান্সমিশন পাইপলাইনে সরবরাহ করা হয়। গ্যাসের উপজাত হিসেবে দৈনিক প্রায় ৩৫.৩২ ব্যারেল কনডেনসেট উৎপাদিত হয়। ২০২৪ সালের মার্চ মাসে এ গ্যাস ক্ষেত্রে কনডেনসেট ও গ্যাসের গড় অনুপাত এবং পানি ও গ্যাসের গড় অনুপাত যথাক্রমে ১.১৪৬ ব্যারেল/মিলিয়ন ঘনফুট এবং ১১.৮৮৩ ব্যারেল/মিলিয়ন ঘনফুট ছিল।
বাখরাবাদ গ্যাসক্ষেত্রের সেলস লাইন গ্যাসের চাপ বৃদ্ধির লক্ষ্যে তিনটি গ্যাস বুষ্টার কম্প্রেসর স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি কম্প্রেসরের কম্প্রেসন ক্ষমতা দৈনিক ১৫ মিলিয়ন ঘনফুট। মোট ০৩ (তিন)টি কম্প্রেসরের মধ্যে দুইটি কম্প্রেসার চলমান এবং অন্য একটি স্ট্যান্ডবাই থাকে।